গ্যালাক্সি কি?

গ্যালাক্সি কি?

Feb 22, 2024 - 6:07 AM
 0

ছায়াপথ শব্দটি ইংরেজি Galaxy শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে বাংলায় ব্যবহৃত হয়। গ্রিক শব্দ γαλαξίαs (গালাক্সিয়াস) থেকে গ্যালাক্সি শব্দের উৎপত্তি। আমাদের সৌরজগত যে ছায়াপথে অবস্থিত তার গ্রিক নাম দেয়া হয়েছিল γαλαξίας যার অর্থ kyklos galaktikos বা দুধালো বৃত্তপথ (Milky circle)। সাধারণত দুধের ন্যায় দেখায় বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে মিক্লিওয়ে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী আল সুফি সর্বপ্রথম কুণ্ডলাকার ছায়াপথের বর্ণনা করেন। তিনি ছিলেন পারস্যদেশীয় একজন জ্যোতির্বিদ।

মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি

তারপর ১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলি একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা রাতের আকাশে আকাশগঙ্গা ছায়াপথ পর্যবেক্ষণ করে বর্ণনা দেন যেঃ উজ্জ্বল ব্যান্ড হিসেবে, এবং তিনি দেখেন যে অসংখ্য উজ্জ্বল বিন্দু দিয়ে ছায়াপথ গঠিত। ১৭৮০ সালে ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী চার্লস মেসিয়ার ৩২ টি ছায়াপথের একটি তালিকা প্রণয়ন করেন। ১৭৮৫ সালে ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্যার উইলিয়াম হার্শেল আকাশের বিভিন্ন অঞ্চলে দৃশ্যমান তারার সংখ্যা গণনা করে ছায়াপথের আকৃতি সম্বন্ধে একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেন।

আমাদের এই মহাবিশ্বে এই রকম ট্রিলিয়ন কিংবা বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে। গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ মহাকর্ষীয় শক্তি দ্বারা আবদ্ধ একটি অতি বৃহৎ সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা যার মধ্যেঃ তারা, আন্তঃনাক্ষত্রিক গ্যাস, সৌরজগৎ, নক্ষত্র, বামন গ্রহ, নেবুলা, ব্ল্যাকহোল, ধূলিকণা, প্লাসমা এবং প্রচুর পরিমাণে অদৃশ্য বস্তু বিরাজমান।

মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি

সাধারণত একটি আদর্শ ছায়াপথে ১০ মিলিয়ন থেকে এক ট্রিলিয়ন পর্যন্ত তাঁরা থাকে যারা সবাই একটি সাধারণ মহাকর্ষীয় কেন্দ্রের চারদিকে ঘূর্ণায়মান, অর্থাৎ নিজ নিজ বলে আবদ্ধ থেকে পরিক্রমা করে। একটি গ্যালাক্সিতে বিচ্ছিন্ন তারা ছাড়াও বহুতারা ব্যবস্থা, তারা স্তবক এবং বিভিন্ন ধরনের নীহারিকা থাকে। একটি ছায়াপথ কিংবা গ্যালাক্সি কয়েকশ আলোকবর্ষ থেকে শুরু করে কয়েক হাজার আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তার হয়।

নোটঃ আলো এক সেকেন্ডে যায় প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার। সুতরাং একবছরে যতোটুকু যায় তা হচ্ছে এক আলোকবর্ষ। এবং ছায়াপথের মধ্যবর্তী দূরত্ব মিলিয়ন আলোকবর্ষের পর্যায়ে ছোঁতে পারে। ছায়াপথের ৯০% ভরের জন্য দায়ী করা হয় অদৃশ্য বস্তুকে। যদিও এদের অস্তিত্ব এবং গঠন সম্পর্কে অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে, ডার্ক ম্যাটার ও এ্যান্টি ম্যাটারেরও অনেকে জোর দাবি জানিয়েছেন এই ভরের কারণ স্বরূপ। ছায়াপথের কেন্দ্রে অতিবৃহৎ কৃষ্ণগহ্বরের (ব্ল্যাকহোল) অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আমরা রাতের আকাশে যেই তাঁরারাজি দেখি তা মাত্র আমাদের গ্যালাক্সির তাঁরা কিংবা নক্ষত্র, এইরূপ বিন্দুর মত অগতিণ গ্যালাক্সির ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যা আমাদের কল্পনারও বাহিরে। আমাদের এই মহাবিশ্বে এতো ট্রিলিয়ন থেকে বিলিয়ন গ্যালাক্সির বর্ণনা দিয়ে শেষ করা সম্ভব না, কেউ যদি টানা ট্রিলিয়ন থেকে বিলিয়ন বছর ধরে গ্যালাক্সি সম্পর্কে লেখেন তাও তার ০.০১% শেষ করা যাবেনা সন্দেহ আছে। শুধু মাত্র সামান্য কিছু গ্যালাক্সির সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো যাতে প্রিয় পাঠকেরা কিছু ধারণা নিতে পারেন যে গ্যালাক্সি মূলত কি।