খিদে পায় কেন?

খিদে পায় কেন?

May 20, 2024 - 10:37 AM
 0

অনেকক্ষণ না খেলেই আমাদের খিদে পায়। তখন আমাদের খাদ্যের দরকার হয়ে পড়ে এমন খাদ্যের যে-খাদ্য শরীরকে জোগাবে পুষ্টি আর শক্তি। কিন্তু খিদে পায় কীভাবে ও কেন?

আমাদের শরীরের নিজস্ব খিদে আছে। এই খিদে জন্মগত। খিদের অনুভূতি বা যে-শরীরের যে-অংশ খিদের অনুভূতির জন্যে দায়ী, সেই বিশেষ অংশের নাম হাউপোথ্যালামাস (Hypothalamus)। এখানে আছে ভোজন-কেন্দ্র যা খিদের অনুভূতি জাগায়। ভোজন-কেন্দ্রকে পরিচালনা করে হাইপোথ্যালামাসের আর-একটি অংশ যার নাম পরিতৃপ্তি-কেন্দ্র (Satiety Centre)। পরিতৃপ্তি-কেন্দ্র ভোজন-কেন্দ্রের কাজকর্ম দেখাশুনা করে, অর্থাৎ কখন খিদে পাওয়া দরকার, কতটা খাওয়া উচিত— এইসব তার নিয়ন্ত্রণে থাকে।

শরীরে খাবারের ঘাটতি দেখা দিলে রক্তে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমে যায়। রক্তে শর্করা কম থাকলে পরিতৃপ্তি-কেন্দ্র, ভোজন-কেন্দ্রের ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেয়। ভোজন-কেন্দ্রের উত্তেজনা বাড়ে, এর ফলে আমাদেরও খিদের অনুভূতি জাগে। খাবার পরে রক্তে শর্করা বেড়ে যায়। পাকস্থলীর মধ্যে খাবারের পরিমাণ নির্দিষ্ট সীমায় পৌঁছালে পরিতৃপ্তি-কেন্দ্র, ভোজন-কেন্দ্রের ওপরে বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেয়। ভোজন-কেন্দ্রের উত্তেজনা তখন কমে। আমাদের খিদেও তখন চলে যায়। ভোজন-কেন্দ্র থেকে নার্ভ দিয়ে খিদের খবর পৌঁছোয় লালা গ্রন্থি ও পাকস্থলীতে। ফলে, পাকস্থলীর পেশির সংকোচন বাড়ে। একে বলে ক্ষুধা সংকোচন (Hunger Contraction)। এই সময় লালাগ্রন্থি ও পাকস্থলীতে পাচক রস বেশি করে বেরোয়।

খিদে পাওয়া আমাদের জন্মগত অনুভূতি। শিশু বা বোধবুদ্ধিহীন মানুষও খিদে পেলে কষ্ট পায়, কান্না শুরু করে। আবার শরীরের চাহিদা ছাড়াও ভালো খাবার দেখলে বা তেমন গন্ধ নাকে এলে অনেক সময়ে খিদেটা চাড়া দিয়ে ওঠে। আবার কেউ যদি রোজ একই সময়ে খাবার খান, তবে তাঁর ওই সময়টাতেই খিদে পাবে।